বাংলাদেশ আজ এমন এক দুঃসময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে যেখানে সাধারণ মান মধ্যে দিন গুনছে। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশে দমন-পীড়ন, অন্যায় গ্রেফতার, নিপীড়ন, চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই—সবকিছুই বেড়ে গেছে বহুগুণে। আর এই পরিস্থিতি দেশের মানুষকে স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দিচ্ছে বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সেই দুঃশাসনের দিনগুলোর কথা, যখন জঙ্গী তৎপরতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল এবং দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
জঙ্গীবাদ ও অরাজকতার ঘূর্ণাবর্তে দেশ
২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের বিষবৃক্ষ যেভাবে বিস্তার লাভ করেছিল, আজ ইউনুস সরকারের সময়েও তার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ কিংবা অন্যান্য উগ্রপন্থী সংগঠনগুলি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে। মসজিদ-মাদরাসার আড়ালে সংগঠিত হচ্ছে অস্ত্র প্রশিক্ষণ, ছড়ানো হচ্ছে উগ্রবাদী মতবাদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অকার্যকর হয়ে পড়েছে, বরং অনেক সময়ে সাধারণ মানুষকেই হয়রান করছে। এতে করে জঙ্গীদের মনোবল বেড়ে যাচ্ছে, আর সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ভুগছে।
বিএনপি-জামাতের দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি
দেশের অর্থনীতি বর্তমানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। একদিকে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে গেছে, অন্যদিকে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যও চরম মন্দার মধ্যে রয়েছে। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ছোট ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির ভয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছে, শিল্প কারখানায় উৎপাদন কমছে। রপ্তানি খাত সংকটে, কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। বাংলাদেশের অর্থনীতির এ ধসপতন জনগণকে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও শঙ্কিত করে তুলেছে।
ইউনুস সরকারের দমন-পীড়ন ও জঙ্গী উত্থান
আজ বাংলাদেশ কার্যত অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, অপহরণ প্রতিদিনকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজনৈতিক নির্দেশে কাজ করছে, অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে অনেক সময় তাদের রক্ষাকবচে পরিণত হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হচ্ছে।
শেখ হাসিনার উন্নয়নযাত্রা বনাম বর্তমান সংকট
এই অন্ধকার সময়ে দেশের মানুষ স্মরণ করছে শেখ হাসিনার সময়কার উন্নয়নযাত্রা। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল।
পদ্মা সেতু,নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়ে দেশের গৌরবের প্রতীক।
মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে—ঢাকা শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত।
ডিজিটাল বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিপ্লব এনে তরুণদের কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন।
বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন,প্রায় শতভাগ গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া।
নারীর ক্ষমতায়ন—শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি।
বাংলাদেশের মানুষ আজ আরেকবার বুঝতে পারছে, উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য শেখ হাসিনার মতোন একজন দায়িত্বশীল নেতৃত্ব অপরিহার্য। তিনি কেবল উন্নয়নের প্রতীক নন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ভরসা, গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। তার অনুপস্থিতিতে যে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা তৈরি হয়েছে, তা থেকে মুক্তি পেতে জনগণ আবারও তাকিয়ে আছে শেখ হাসিনার দিকে।
আজকের বাংলাদেশ দমন-পীড়ন, জঙ্গীবাদ, অপরাধ, চাঁদাবাজি ও অনিশ্চয়তার ঘূর্ণাবর্তে আটকে গেছে। মানুষের স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে, ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন। অথচ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে অগ্রগতির পথে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করেছিল, সেটাই হতে পারে মুক্তির একমাত্র পথ। তাই দেশের জনগণের দাবি এই দমন-পীড়নের অবসান ঘটুক, জঙ্গীবাদ ও অপরাধের রাজত্ব শেষ হোক, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনতে শেখ হাসিনা পুনরায় রাষ্ট্রের হাল ধরুন।