“কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়াতে মাদ্রাসার অজুর পানি যাওয়াকে ক্ষেন্দ্র করে সংঘর্ষ ”
মোঃ আলী আশরাফ ইলিয়াস (নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি)
নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের আশুজিয়া গ্রামে দারুল ওলুম বাংলাদেশ মাদ্রাসার অজুর পানি যাওয়াকে ক্ষেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী অগ্রনী কোচিং সেন্টারের মালিক হেলাল আহমেদের সাথে। এই ঘটনায় মাদ্রাসার পাঁচজন ছাত্র আহত হয় এবং হেলাল আহমেদের কোচিং সেন্টার ভাংচুর হয়।
সরেজমিনে লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় দারুল ওলুম বাংলাদেশ মাদ্রাসা ও অগ্রনী কোচিং সেন্টার নামক দুটি প্রতিষ্ঠান পাশাপাশি রাস্তার এপার ওপার। মাদ্রাসার ছাত্রদের অজুর পানি পাশে থাকা জমির ড্র্যান দিয়ে প্রবাহিত হয়। ড্র্যান ঘাসে জমে যাওয়ায় সেখানে পানি আবদ্ধ হয়ে যায়। এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কোচিং সেন্টারের মালিক হেলাল আহমেদ আপত্তি করে আসছিলেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি এটা নিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে বচসায় লিপ্ত হন। একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হলে মাদ্রাসার চার ছাত্র আহত হয় এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে হেলাল আহমেদের পরিচালিত কোচিং সেন্টারে ছাত্ররা আক্রমণ করে ভাংচুর করে। আহত মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে রাকি আলম (১২) ও আশিকুর রহমান (১৬) মাথা ফেটে যায় এবং আলহাজ্ব মিয়া (১৫) ও আব্দুল্লাহ্ আল নোমান (১৯) এর হাতে আর শরীরে আঘাত পায়। কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় আহত ছাত্র আশিকুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন,বৃহস্পতিবার সকালবেলা হেলাল আহমেদ লোকজন নিয়ে এসে আমাদের জামাত শিবির বলে গালি দিয়ে পিটানো শুরু করে। আমরা মাদ্রাসার ভেতর চলে আসলে বাইরে থেকে ইটপাটকেল মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। আমরা এখানে পড়াশোনা করতে এসেছি কোন রাজনীতি করিনা। তারপরও আমাদের এমন অপবাদ দিয়ে মারধর করা হয়েছে। এনিয়ে মাদ্রাসার মোহতামিম মাঃ মাসুম আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এই মাদ্রাসাটি একটি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান। এটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ এই অবস্থায় আসার জন্য বহু কষ্ট করেছি। আমাদের এই মাদ্রাসার পাশে জমির ড্র্যানে অজুর পানি যায়। কোচিং সেন্টারের পাশেই মালিক হেলাল আহমেদের একটি দোকানও আছে। সেখানে আমাদের মাদ্রাসার একটি ছাত্রকে একদিন তিনি চড় মারেন। সেই থেকে ওনার দোকানে মাদ্রাসার কোন ছাত্র যায়না। এজন্য তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে তিনি আমাদের মাদ্রাসার পানি যাওয়াকে ওচিলা করে সবসময় বকাঝকা করেন। আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের এমন সক্ষমতা নেই যে এই পানির জন্য স্হায়ী কোন উদ্যোগ নেব। পাশের জমির মালিকের কাছে বিষয়টি বললে তিনি বলেন পানি যাক সমস্যা নেই। কিন্তু হেলাল আহমেদের জায়গা দিয়ে পানি যাচ্ছেনা তারপরও তিনি পানি জমে গন্ধ হয় বলে খুব উচ্যবাচ্য করতেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি এটাকে ক্ষেন্দ্র করে ছাত্রদের উপর চড়াও হন।ঘটনা যাতে না বাড়ে সেজন্য আমি ছাত্রদের মাদ্রাসার ভেতরে ঢুকিয়ে ভেতর থেকে গেট বন্ধ করে দেই। একপর্যায়ে বাইরে থেকে ইটপাটকেল ছুঁড়া শুরু হলে দুই ছাত্রের মাথায় লেগে মাথা ফেটে যায়। এরপর ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে গিয়ে হেলাল আহমেদের কোচিং সেন্টারে হামলা করে।
অগ্রনী কোচিং সেন্টারের মালিক হেলাল আহমেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ওনার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর ইউএনও ও ওসি মহোদয় গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। রাতের বেলায় স্হানীয় মাতব্বরগণ বিষয়টি আপসরফার চেষ্টা করলেও তার কোন সুরাহা হয়নি। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।