নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার মহেন্দ্র খাল দখল করে গড়ে উঠেছে দোকানপাট,খালটি দখলমুক্ত করতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা
রিপোর্টঃ-
সৈয়দ নুর আলম বাদশা
বার্তা সম্পাদকঃ-
দৈনিক বাংলার মুক্তকন্ঠ সংবাদ।
নোয়াখালীর এক সময়ের খরস্রোতা মহেন্দ্র খাল দখল-দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো এ খাল দিয়ে মেঘনা-ডাকাতিয়া নদী হয়ে ছোট বড় ট্রলারে ও নৌকায় পণ্য সামগ্রী নোয়াখালীর বিভিন্ন হাট বাজারে আনা নেয়া করতো ব্যবসায়ীরা। এ খালের পানি এখানকার কৃষি জমির সেচের কাজে ব্যবহৃত হতো। অব্যাহত দখল দূষণে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী মহেন্দ্র খালটি। অবৈধ দখলদারদের দখলে ও ময়লা আবর্জনায় হারিয়ে যাচ্ছে খালটি। এক সময়ের খরস্রোতা খালটি এখন নালায় পরিণত হয়েছে। জানা যায়, মহেন্দ্র খাল ৫০০ বছরের পুরনো, মোঘল আমলের। ভারতের ত্রিপুরার পাহাড়ি ঢল থেকে নোয়াখালী ও কুমিল্লার আংশিক অঞ্চলকে রক্ষায় পানি নিষ্কাশন ও সেচ কাজের সুবিধার জন্য এ খালটি খনন করা হয়। ১৯০৫-১৯১০ সালের মধ্যে স্থানীয় জমিদার প্রথম খালটি সংস্কার করেন। সংস্কার করে জমিদার এ খালের নামকরণ করেন মহেন্দ্র খাল। ১৯৮০-৮১ সালে মহেন্দ্র খালের আংশিক অংশের সংস্কার করা হয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খালটিরর কিছু অংশ খনন করা হলেও চাটখিল বাজারের অংশ প্রভাবশালীদের বাধার কারণে খনন করা হয়নি।
বর্তমানে এক শ্রেণির প্রভাবশালী জেলা পরিষদের অস্থায়ী একসনা লিজের অপব্যবহার করে খালের মাঝখানে পাকা পিলার দিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করে পুরো খাল দখলে করে নিচ্ছে। মহেন্দ্র খালের চাটখিল পৌরসভা অংশে খালের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। পৌরসভা অংশের চাটখিল বাজার ও আবাসিক এলাকার পচা আবর্জনা ফেলে খালের অস্তিত্ব বিলিন করে দিচ্ছে। চাটখিল পৌর বাজারে প্রবেশ পথের ব্রিজ এর নিচের অংশে আবর্জনা ফেলায় ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া খালটির চাটখিল পৌর এলাকা, দশঘরিয়া বাজার, সাহাপুর বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। চাটখিল- সোনাইমুড়ী উপজেলার বাংলা বাজার, জয়াগ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মহেন্দ্র খাল প্রভাবশালীরা দখল করে ভরাট করে নিয়েছে। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, মহেন্দ্র খাল দিয়ে স্বাধীনতার পূর্ব ও স্বাধীনতার পরে শত শত নৌকা ও ট্রলারের মাধ্যমে পণ্য সামগ্রী নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনী থেকে চাটখিলের বিভিন্ন হাট বাজারে আনা নেয়া হতো। এখন এগুলো শুধুই স্মৃতি হয়ে রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি মহেন্দ্র খাল জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হোক। এ ছাড়া কৃষিনির্ভর চাটখিল এলাকার কৃষকরা যাতে এ খালের পানি সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করতে পারে সে ব্যবস্থাও নেয়া দরকার।
চাটখিল বাজার সহ মহেন্দ্র খালের যেসব এলাকায় দোকানপাট গড়ে উঠেছে, এগুলো উচ্ছেদ করে খালটিকে দখলমুক্ত করার জন্য সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।