রিকশার প্যাডেলে ঘোরানো চাকার সাথে তাল মিলিয়ে বাবা আব্দুল আউয়ালের স্বপ্নগুলোও যেন ঘুরপাক খেত। দিনের পর দিন ঘাম ঝরিয়ে, রিকশার চাকা ঘুরিয়ে তিনি কেবল সংসারই চালাননি, বুনে চলেছিলেন দুই মেয়ে বুশরা ও তৃষার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। যশোরের মণিরামপুরের রিকশাচালক আব্দুল আউয়ালের দুই মেয়ে বুশরা ও তৃষা দুজনেই একই সাথে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এ যেন এক রূপকথার গল্প! দারিদ্র্যের কষাঘাত আর কঠিন বাস্তবতার মধ্যেও হার না মানা এক বাবার অদম্য চেষ্টা এবং দুই মেয়ের অধ্যবসায় ও মেধার ফসল এটি। ছোটবেলা থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখতেন বুশরা ও তৃষা। সেই স্বপ্ন পূরণের পথে বহু বাধা অতিক্রম করেছেন তারা। বাবার সামান্য আয়ে যখন সংসার চালানোই কঠিন, তখন লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া ছিল এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আব্দুল আউয়াল তার মেয়েদের স্বপ্ন পূরণে পিছপা হননি। নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন তাদের পেছনে।
আজ তার সেই আত্মত্যাগ সার্থক। বুশরা ও তৃষা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাননি, তারা প্রমাণ করেছেন যে ইচ্ছা আর কঠোর পরিশ্রম থাকলে যেকোনো বাধাই অতিক্রম করা সম্ভব। তাদের এই সাফল্য অসংখ্য তরুণ-তরুণীর জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। রিকশাচালক বাবার দুই 'রাজকন্যা' এখন জ্ঞান অর্জনের নতুন পথে পা রেখেছেন। তাদের এই পথচলা শুভ হোক, এবং তারা যেন দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে, এই আমাদের প্রত্যাশা।